Table of Contents
কুরআন তিলাওয়াতের সিজ্দা অধ্যায় -সহিহ বুখারী ২য় খণ্ড

বুখারি হাদিস নং ১০০৬ – কুরআন তিলাওয়াতের সিজদা ও এর পদ্ধতি।
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ……….আবদুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় সূরা আন-নাজম তিলাওয়াত করেন। এরপর তিনি সিজদা করেন এবং একজন বৃদ্ধ লোক ছাড়া তাঁর সঙ্গে সবাই সিজদা করেন। বৃদ্ধ লোকটি এক মুঠো কংকর বা মাটি হাতে নিয়ে তার কপাল পর্যন্ত উঠিয়ে বলল, আমার জন্য এ যথেষ্ট। আমি পরবর্তী যমানায় দেখেছি যে, সে কাফির অবস্থায় নিহত হয়েছে।
বুখারি হাদিস নং ১০০৭ – সূরা তানযীনুস-সাজদা-এর সিজদা।
মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফ রহ…………আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুক্রবার ফজরের সালাতে الم تنزيل السجدة هل এবং أتى على الإنسان সূরা দুটি তিলাওয়াত করতেন।

বুখারি হাদিস নং ১০০৮ – সূরা সোয়াদ -এর সিজদা।
সুলাইমান ইবনে হারব ও আবু নুমান রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সূরা সোয়াদ এর সিজদা অত্যাবশ্যক সিজদা সমূহের মধ্যে গণ্য নয়। তবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি তা তিলাওয়াতের পর সিজদা করতে দেখেছি।
বুখারি হাদিস নং ১০০৯ – সূরা আন নাজমের সিজদা।
হাফস ইবনে উমর রহ…………আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত যে, একবার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা আন নাজম তিলাওয়াত করেন, এরপর সিজদা করেন। তখন উপস্থিত লোকদের এমন কেউ বাকী ছিল না, যে তাঁর সঙ্গে সিজদা করেনি। কিন্তু এক ব্যক্তি এক মুঠো কংকর বা মাটি হাতে নিয়ে কপাল পর্যন্ত তুলে বলল, এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। (আব্দুল্লাহ রা. বলেন) পরে আমি এ ব্যক্তিকে দেখেছি যে, সে কাফির অবস্থায় নিহত হয়েছে।

বুখারি হাদিস নং ১০১০ – মুশরিকদের সাথে মুসলিমগণের সিজদা করা আর মুশরিকরা অপবিত্র। তাদের উযূ হয় না।
মুসাদ্দাদ রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা ওয়ান-নাজম তিলাওয়াতের পর সিজদা করেন এবং তাঁর সঙ্গে সমস্ত মুসলিম, মুশরিক, জ্বিন ও ইনসান সবাই সিজদা করেছিল।
বুখারি হাদিস নং ১০১১ – যিনি সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করলেন। অথচ সিজদা করলেন না।
সুলাইমান ইবনে দাউদ আবু রাবী রহ…………যায়েদ ইবনে সাবিত রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা ওয়ান-নাজম তিলাওয়াত করেন অথচ এতে সিজদা করেননি।
হাদীস নং ১০১২
আদম ইবনে আবু ইয়াস রহ……..যায়েদ ইবনে সাবিত রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সামনে সূরা ওয়ান-নাজম তিলাওয়াত করলাম। কিন্তু তিন এতে সিজদা করেননি।

বুখারি হাদিস নং ১০১৩ – সূরা ইযাস সামাউন শাককাত -এর সিজদা।
মুসলিম ও মুআয ইবনে ফাযালা রহ………..আবু সালামা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আবু হুরায়রা রা. -কে দেখলাম, তিনি ইযাস সামাউন শাক্কাত সূরা তিলাওয়াত করলেন এবং সিজদা করলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আবু হুরায়রা ! আমি কি আপনাকে সিজদা করতে দেখিনি ? তিনি বললেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সিজদা করতে না দেখলে সিজদা করতাম না।
বুখারি হাদিস নং ১০১৪ – তিলাওয়াতকারীর সিজদার কারণে সিজদা করা।
মুসাদ্দাদ রহ……..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমাদের সামনে এমন এক সূরা তিলাওয়াত করলেন, যাতে সিজদার আয়াত রয়েছে। তাই তিনি সিজদা করলেন এবং আমরাও সিজদা করলাম। ফলে অবস্থা এমন দাঁড়াল যে, আমাদের কেউ কেউ কপাল রাখার জায়গা পাচ্ছিলেন না।

বুখারি হাদিস নং ১০১৫ – ইমাম যখন সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করেন তখন লোকের ভীড়।
বিশর ইবনে আদম রহ……..ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করতেন এবং আমরা তাঁর নিকট থাকতাম. তখন তিনি সিজদা করতেন এবং আমরাও তাঁর সঙ্গে সিজদা করতাম। এতে ভীড় হত যে, আমাদের মধ্যে কেউ কেউ সিজদা করার জন্য কপাল রাখার জায়গা পেত না।
বুখারি হাদিস নং ১০১৬ – যারা অভিমত প্রকাশ করেন যে, আল্লাহ তা’আলা তিলাওয়াতের সিজদা ওয়াজিব করেননি।
ইবরাহীম ইবনে মূসা রহ……….উমর ইবনে খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত, তিনি এক জুমুআর দিন মিম্বরে দাঁড়িয়ে সূরা নাহল তিলাওয়াত করেন। এতে যখন সিজদার আয়াত এল, তখন তিনি মিম্বর থেকে নেমে সিজদা করলেন এবং লোকেরাও সিজদা করল। এভাবে যখন পরবর্তী জুমুআ এল, তখন তিনি সে সূরা পাঠ করেন। এতে যখন সিজদার আয়াত এল, তখন তিনি বললেন, হে লোক সকল ! আমরা যখন সিজাদর আয়াত তিলাওয়াত করি, তখন যে সিজদা করবে সে ঠিকই করবে, যে সিজদা করবে না তার কোন গুনাই নেই। তার বর্ণনায়। (বর্ণনাকারী বলেন) আর উমর রা. সিজদা করেন নি। নাফি রহ. ইবনে উমর রা. থেকে আরো বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা সিজদা ফরয করেন নি, তবে আমরা ইচ্ছা করলে সিজদা করতে পারি।

বুখারি হাদিস নং ১০১৭ – সালাতে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদা করা।
মুসাদ্দাদ রহ……….আবু রাফি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একবার আবু হুরায়রা রা. -এর সাথে ইশার সালাত আদায় করেছিলাম। তিনি সালাতে ‘ইযাস সামাউন শাক্কাত’ সূরা তিলাওয়াত করে সিজদা করলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ কী ? তিনি বললেন, এ সূরা তিলাওয়াতের সময় আবুল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে আমি এ সিজদা করেছিলাম। তাই তাঁর সঙ্গে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত এভাবে আমি সিজদা করতে থাকব।
বুখারি হাদিস নং ১০১৮ – ভিড়ের কারণে সিজদা দিতে জায়গা না পেলে।
সাদাকা রহ……….ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন এমন সূরা তিলাওয়াত করতেন যাতে সিজদা রয়েছে, তখন তিনি সিজদা করতেন এবং আমরাও তাঁর সঙ্গে সিজদা করতাম। এমন কি (ভিড়ের কারণে) আমাদের মধ্যে কেউ কেউ কপাল রাখার জায়গা পেত না।
